ষাটের দশকে শেষ দিকে অভিনয় শুরু করা ববিতাকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত বড় পর্দায় দেখা গেছে। নার্গিস আক্তারের ‘পুত্র এখন পয়সাওয়ালা’ ছিল তাঁর সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র। এরপর আর কোনো চলচ্চিত্রে দেখা যায়নি তাঁকে। তবে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব যে পাননি তা নয়। এ বছর মুক্তি পাওয়া ‘রাজকুমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাবও পেয়েছিলেন বরেণ্য এই চিত্রনায়িকা। কিন্তু ব্যস্ততার পাশাপাশি মনের মতো চরিত্র না পাওয়ার কথাও জানিয়েছিলেন তখন। ববিতার মতো অভিনয় তো করতে চাই, কিন্তু নায়কের মা কিংবা নায়িকার মা—এমন চরিত্রে নয়। এমন চরিত্র হতে হবে, যা পুরো গল্পে প্রভাব বিস্তার করবে।
ষাটের দশকের শেষ দিকে ববিতার অভিনয়ের শুরু। প্রথম সিনেমায় চিত্রনায়িকা বড় বোন সুচন্দার ছোট বোনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ববিতা। ‘সংসার’ নামের সেই ছবিতে সুচন্দার নায়ক ছিলেন রাজ্জাক। এর পরপরই ‘শেষ পর্যন্ত’ নামের একটি চলচ্চিত্রে নায়িকা হন ববিতা, যেটির নায়ক রাজ্জাক। ‘জ্বলতে কি সুরুজ’ চলচ্চিত্রে বাবা–মায়ের ফরিদা আকতার পপি হয়ে ওঠেন ববিতা নামে। এভাবেই বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ববিতার পথচলা শুরু। সেই যে শুরু, এরপর ২০১৫ সাল পর্যন্ত অভিনয় চালিয়ে গেছেন। অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র প্রযোজনাও করেছেন।
কয়েক মাস ধরে ববিতা কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র মিলিয়ে থাকছেন। কানাডায় তাঁর একমাত্র ছেলে অনিক থাকেন আর যুক্তরাষ্ট্রে ভাইবোনেরা থাকেন।
ববিতা জানালেন, অভিনয়জীবনে এখনো আফসোস রয়েছে তাঁর। তাঁর মতে, এ দেশে অভিজ্ঞ শিল্পীদের একটা সময় পর ঠিকঠাকভাবে কাজে লাগাতে পারে না। অথচ বাইরের দেশের দিকে যদি দেখি, বয়স হলেও সেসব অভিজ্ঞ শিল্পীকে ঘিরেই সিনেমার গল্প এগিয়ে যায়। এ দেশে মৌলিক কোনো গল্প নিয়ে সিনেমা তৈরি করতে ভয় পান নির্মাতারা। ববিতা বলেন, ‘গত ৯ বছরে অনেক নির্মাতাই আমাকে সিনেমার গল্প শুনিয়েছেন। কোনো গল্পই সেই অর্থে আমার ভালো লাগেনি। একেবারে নতুন আঙ্গিকের মৌলিক কোনো গল্প না পেলে আমি আর অভিনয় করতে চাই না। আমি এখনো তেমন এক গল্পের অপেক্ষায় আছি, যে গল্পে অভিনয় করার জন্য আমি মনপ্রাণ উজাড় করে কাজ করব।’